১| ইসলামে নফল ইবাদত ঘরে আদায় করা উত্তম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শবে-বরাতে নফল ইবাদতগুলো অতি উত্তম, তবে এবার যেহেতু পরিস্থিতি অন্যরকম এবং প্রায় সর্বত্র মসজিদসমূহে রাষ্ট্রীয় বা সরকারি কড়াকড়ি আরোপিত হয়েছে, সেহেতু শবে-বরাতের যাবতীয় ইবাদত ঘরেই সমাধা করা উচিত।
২। শবে-বরাতের নফল নামাজ আদায়ের জন্য রাকাতের সীমা ও সূরা নির্ধারিত নয়, তাই যার যার খুশিমত এবং সাধ্যানুযায়ী পাঠ করবেন।
৩। এ রাতে নফল ইবাদত হিসেবে নামাজ এবং পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা অতি উত্তম। কোরআন তেলাওয়াতে সক্ষম ব্যক্তি ঘরে বসেই যত বেশি সম্ভব তেলাওয়াত করবেন। যারা কোরআনের বিভিন্ন সূরা সমন্বিত দোয়া-দরুদ ও অজিফা পাঠে অভ্যস্ত, তারা এ রাতে এগুলো পাঠ করতে পারেন ।
৪। বহু প্রকারের তাসবীহ, তাহলীল, দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ এবং মোনাজাত রয়েছে, যার পক্ষে যা সুবিধাজনক ও সহজ হয় তিনি তা পাঠ করবেন ।
৫। আজকাল বাংলা ভাষায় দোয়া-দরুদ সংক্রান্ত ভালো ভালো বই-পুস্তক পাওয়া যায়। মূল আরবি এবং বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদসহ প্রকাশিত এসব বই-পুস্তক হতে শবে-বরাতে পাঠ করা যেতে পারে।
৬। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে সময় অধিক ব্যয় না করে এ পবিত্র রজনীতে আল্লাহর এবাদত বন্দিগীতে আত্মনিয়োগ করাই শ্রেয়।
৭। এ পবিত্র ও সৌভাগ্যময় রজনী প্রত্যেক মোমেন মুসলমানের স্বীয় গোনাহ মাফ করানোর এবং ভাগ্যোন্নয়নের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে চাওয়া-পাওয়ার উপযুক্ত সময় বলে বিভিন্ন হাদিস হতে জানা যায়। সুতরাং অবহেলায় এ সময় আল্লাহর অসীম বরকত ও রহমত হতে বিরত থাকা উচিত নয়। এরূপ সৌভাগ্যময় রাত জীবনে আর নাও আসতে পারে।
৮। সর্ব প্রকারের রোগ-বালাই, বিপদাপদ, অভাব-অনটন ইত্যাদি হতে সুরক্ষার জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করার জন্য উপযুক্ত সময় এ রাত।
৯। সর্ব প্রকারের পাপাচার হতে রক্ষা এবং সমগ্র মানবের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দোয়ার মাধ্যমে এ রাত অতিবাহিত করা এবং পরবর্তী সময়েও তা অব্যাহত রাখা উচিত।
♦ এ রাতের আরেকটি আমল হলো আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর কবর জিয়ারত করা। দুর্বল হাদিস দ্বারা এটি প্রমাণিত হলেও ইসলামী শরীয়তে যেহেতু ‘কবর জিয়ারত দ্বারা জিয়ারতকারীর উপকার হয় যেমন কবর দেখে সে আখেরাতমুখী হওয়ার সুযোগ পায় এ কারণে কবর জিয়ারত বৈধ করা হয়েছে সুতরাং শরীয়তের বিধান পালন করে, এরাতেও আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর কবর জিয়ারত করা যেতে পারে।
♦ হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘হজরত বুরাইদা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আমি ইতোপূর্বে তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর জিয়ারত কর। অন্য রিওয়ায়াতে আছে, এটা পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। (মুসলিম)।
♦ শবেবরাত পালনে আরেকটি প্রথা প্রচলিত আছে, তা হচ্ছে- এ রাতে আতশবাজী ও হালুয়া রুটি বিতরণ। ইসলামি শরীয়ত আতশবাজীর বৈধতা দেয় না। আর হালুয়া রুটি বিতরণের মাধ্যমে মেহমানদারী বা অন্নহীনদের অন্নদান হলেও বিশেষ করে এই রাতে হালুয়া রুটির ছড়াছড়ি করার অনুমতি দেয় না।
Copyright © 2023 বর্ণ টিভি | Design & Developed By: ZamZam Graphics