শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়। শবে বরাত কথাটি ফারসি। যার অর্থ মুক্তির যামিনী। ‘শবে বরাত’-এর আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারকাত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ, পারস্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফারসি, উর্দু, বাংলা, হিন্দিসহ নানান ভাষায় যা ‘শবে বরাত’ নামেই অধিক পরিচিত।
ইসলামি তমদ্দুন তথা মুসলিম কৃষ্টিতে যেসব দিবস ও রজনী বিখ্যাত, এর মধ্যে পাঁচটি রাত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই বিশেষ পাঁচটি রাত হলো: দুই ঈদের রাত্রিদ্বয়, শবে মেরাজ, শবে বরাত ও শবে কদর। যাঁরা রাতের ইবাদতের গুরুত্ব অনুধাবন করেন, তাঁরা প্রতিটি রাতকে শবে বরাত বানিয়ে নেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এই উভয়ের মাঝে যা আছে সেসবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সেদিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরা-৪৪ [৬৪] দুখান, রুকু: ১, আয়াত: ১-১০, পারা: ২৫, পৃষ্ঠা ৪৯৬-৪৯৭/১৪-১৫)। মুফাসসিরিনগণ বলেন, এখানে ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবান মাসে পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)। হজরত ইকরিমা (রা.) প্রমুখ কয়েকজন তফসিরবিদ থেকে বর্ণিত আছে, সুরা দুখানের দ্বিতীয় আয়াতে বরকতের রাত্রি বলে শবে বরাত বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)
Copyright © 2023 বর্ণ টিভি | Design & Developed By: ZamZam Graphics